বাংলাদেশে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং-ব্লগিং এর মাধ্যমে আয়ের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে প্রায় ৫ বৎসর যাবৎ। যদিও আরও অনেক আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিং-ব্লগিং জনপ্রিয় অনলাইন পেশা হিসাবে সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে অমিত সম্ভাবনাময় এ সেক্টরটি যেন বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের প্রধান উপায় হয়-এ প্রত্যাশা আমাদের পূর্ব থেকেই যেমন ছিল, এখনও আছে।
কিন্তু আজকে মূল্যায়নের সময়ে এসেছে আমাদের অসীম সাহসী আর ডেটারমাইন যুবকেরা কতভাগ সফল হয়েছে।
আমাদের আল-হেরার সন্মানিত গ্রাহক ঠাকুরগাঁও এর ধনঞ্জয় দেবনাথ যখন ফোন করে বলে-আমি একা ওডেস্কে ডাটা এন্ট্রির কাজ করে কুলাতে পারছি না, কিভাবে Odesk টিম গঠন করব? এমনিভাবে মৌলভীবাজারের রিকন গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে মাসে ১০০০ ডলার উপার্জন করছে-এগুলো শুনে বুক ফুলে যায়।
অন্যদিকে আর এক গ্রাহক ফোন করে যখন বলে-স্যার আমি আপনাদের প্রায় সব লার্নিং নিয়েছি, কিন্তু এখনও সফল হতে পারিনি, কোন কাজ পাইনি। তখন প্রশ্ন জাগে, এ সংখ্যা কত যারা এখনও সফল হতে পারেনি! প্রকৃতপক্ষে এর সঠিক হিসাব আমাদের কাছে নেই। তবে আশার কথা, কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ সফরে আসা ওডেস্কের প্রধান নির্বাহী ম্যাট কুপার বলেছেন-বাংলাদেশ বর্তমানে ওডেস্কে সারা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
আজকে আমি যে বিষয়টি আলোকপাত করতে চাচ্ছি তা হচ্ছে, দীর্ঘদিন চেষ্টা চালানোর পরও যারা এখনও অনলাইনে সফলতা পাননি, তার কারনসমূহ কি এবং সফলতার উপায়সমূহ কি?
Img source: http://justcreative.com
ফ্রিল্যান্সিং এ সফলতা না পাওয়ার কারনসমূহঃ
১. নিদ্দিষ্ট বিষয়ে পরিপূর্ণ দক্ষতা না থাকা। উদাহরণস্বরুপ, বায়ার আপনাকে গ্রাফিক্সের একটি কাজ ব্যানার ডিজইন করতে বলল। এখানে শুধু যেনতেন একটি ব্যানার তৈরি করলেই হবে না, ব্যানারটা কতটা মানসন্মত ও প্রফেশনাল হল তা বিবেচ্য।
২. ওডেস্ক বা অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ১০০% প্রোফাইল কমপ্লিট না হওয়া।
৩. দুর্বল পোর্টফোলিওঃ পোর্টফোলিও কতটা প্রফেশনালমানের তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বায়ার প্রাথমিকভাবে একজন ফ্রিল্যান্সারের পোর্টফোলিও পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এজন্য, যে বিষয়ে কাজ করতে চান তার লাইভ পোর্টফোলিও দেওয়ার চেষ্টা করুন। যেমনঃ আপনি যদি SEO/লিংক বিল্ডিং এর কাজ করতে চান, তবে এ বিষয়ক কাজ প্র্যাকটিক্যালি সফলতার সাথে করে তার স্ক্রীণশট নিয়ে পোর্টফোলিও রাখুন। তেমনিভাবে ডাটা এন্ট্রি বা ওয়েব রিসার্সের কাজের জন্য এ বিষয়ক প্র্যাকটিক্যাল কাজ করে তার স্ক্রীণশট রাখুন।
এক্ষেত্রে, যেসব ফ্রিল্যান্সারদের ভাল রেটিং ও রেপুটেশন রয়েছে তাদের পোর্টফোলিও দেখে আইডিয়া নিয়ে পোর্টফোলিও সাজাতে পারেন। ওডেস্কে যেকোন প্রজেক্টের নিচে Application list এ ক্লিক করলেই যে কোন ফ্রিল্যান্সারের পোর্টফোলিও দেখা যায়। নিম্নে কতিপয় প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সারের পোর্টফোলিও লিংক প্রদত্ত হল।
এক্ষেত্রে, যেসব ফ্রিল্যান্সারদের ভাল রেটিং ও রেপুটেশন রয়েছে তাদের পোর্টফোলিও দেখে আইডিয়া নিয়ে পোর্টফোলিও সাজাতে পারেন। ওডেস্কে যেকোন প্রজেক্টের নিচে Application list এ ক্লিক করলেই যে কোন ফ্রিল্যান্সারের পোর্টফোলিও দেখা যায়। নিম্নে কতিপয় প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সারের পোর্টফোলিও লিংক প্রদত্ত হল।
৪. সুন্দর ও রিলেটেড কভার লেটার না লেখাঃ বিড করার সময় কভার লেটার হতে হবে সুনির্দ্দিষ্ট। কভার লেটারে প্রজেক্ট বিবরণ আপনি ভালমত বুঝতে পেরেছেন এবং আত্ববিশ্বাস ফুটিয়ে তুলতে হবে।
৫. বিডের সময় সুনির্দ্দিষ্ট Sample এটাচ না করাঃ
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিডের সময় যে Sample ফাইলটি এটাট করবেন তা সুনির্দ্দিষ্ট ও প্রফেশনালমানের হওয়া বাঞ্চনীয়। ধরুন, আপনি Psd to Html একটি কাজে বিড করেছেন, এক্ষেত্রে পূর্বেই Psd to Html এর সুন্দর ও প্রফেশনালমানের কয়েকটি ডিজাইন করে রাখুন। বিড করার সময় এটাচ করে দিন। অথবা, এসইও এর কাজে বায়ার চাইল .edu ব্যাকলিংকের কাজ। আপনি বিডের সময় এটাচ করলেট Social Bookmarking এর স্ব্যাম্পল। এতে কাজ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিডের সময় যে Sample ফাইলটি এটাট করবেন তা সুনির্দ্দিষ্ট ও প্রফেশনালমানের হওয়া বাঞ্চনীয়। ধরুন, আপনি Psd to Html একটি কাজে বিড করেছেন, এক্ষেত্রে পূর্বেই Psd to Html এর সুন্দর ও প্রফেশনালমানের কয়েকটি ডিজাইন করে রাখুন। বিড করার সময় এটাচ করে দিন। অথবা, এসইও এর কাজে বায়ার চাইল .edu ব্যাকলিংকের কাজ। আপনি বিডের সময় এটাচ করলেট Social Bookmarking এর স্ব্যাম্পল। এতে কাজ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
৬. সহজ কাজে বিড, কঠিন কাজে বিড না করাঃ
বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার সহজ কাজ যেমনঃ ডাটা এন্ট্রি রিলেটেড কাজে বিড করে। ফলে বিশাল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়। এক্ষেত্রে, তুলনামূলক একটু কঠিন যেখানে প্রতিযোগিতা কম সেসব কাজে নিজেকে দক্ষ করে বিড করলে দ্রুত সফলতা পাওয়া সম্ভব। উদাহরণস্বরুপঃ ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্টের অনেক শাখা প্রশাখা রয়েছে। আপনি নরমাল ফটোশপ ও Html/Css দিয়ে ভালমানের সাইট ডিজাইন শিখুন। অথবা ওয়ার্ডপ্রেস বা জুমলা যে কোন একটি সিএমএস শিখুন। দেখবেন এসব কাজে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। একইভাবে সহজে শিখতে পারেন SEO/লিংক বিল্ডিং এর কাজ।
বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার সহজ কাজ যেমনঃ ডাটা এন্ট্রি রিলেটেড কাজে বিড করে। ফলে বিশাল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়। এক্ষেত্রে, তুলনামূলক একটু কঠিন যেখানে প্রতিযোগিতা কম সেসব কাজে নিজেকে দক্ষ করে বিড করলে দ্রুত সফলতা পাওয়া সম্ভব। উদাহরণস্বরুপঃ ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্টের অনেক শাখা প্রশাখা রয়েছে। আপনি নরমাল ফটোশপ ও Html/Css দিয়ে ভালমানের সাইট ডিজাইন শিখুন। অথবা ওয়ার্ডপ্রেস বা জুমলা যে কোন একটি সিএমএস শিখুন। দেখবেন এসব কাজে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। একইভাবে সহজে শিখতে পারেন SEO/লিংক বিল্ডিং এর কাজ।
৭. স্কিল টেষ্ট না দেওয়াঃ নির্দ্দিষ্ট বিষয়ে স্কিল টেষ্ট দেওয়ার মাধ্যমে প্রোফাইলকে সমৃদ্ধ করতে হবে। উদাহরণস্বরুপঃ ডাটা এন্ট্রি কাজের Ms Word, Excel, U.S. English Basic Skills ইত্যাদি টেষ্ট দিতে হবে। ওয়েব ডিজাইনের জন্য রিলেটেড টেষ্ট যেমনঃ Html, CSS, wordpress, joomla ইত্যাদি টেষ্ট দিতে হবে। এসব স্কিল টেষ্ট প্রোফাইলে প্রদর্শিত হওয়ায় কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
৮. ইংরেজি কমিনিউকেশনে নূন্যতম যোগ্যতা না থাকাঃ
কমপক্ষে প্রজেক্ট বিবরণ বুঝতে পারা, বায়ারের মেসেজ বুঝতে পারা এবং বায়ারকে আপনার বক্তব্য বুঝাতে পারা-এতটুকু ইংরেজি দক্ষতা থাকতে হবে।
কমপক্ষে প্রজেক্ট বিবরণ বুঝতে পারা, বায়ারের মেসেজ বুঝতে পারা এবং বায়ারকে আপনার বক্তব্য বুঝাতে পারা-এতটুকু ইংরেজি দক্ষতা থাকতে হবে।
৯. রেসপন্স করতে দেড়ী করাঃ বায়ার যে কোন সময় আপনাকে নক করতে পারে। এজন্য, সর্বদা অনলাইনে এ্যাকটিভ থাকা। বায়ার নক করলে যতদ্রুত সম্ভব রিপ্লাই দেওয়া।
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ পাওয়ার কিছু টিপস্ঃ
>> ভাল রেটিং এর জন্য প্রথমদিকে কমমূল্যে বিড করুন।
>> প্রজেক্ট সাবমিট হওয়ার সাথে সাথে বিড করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ, প্রথম সারির আবেদনকারী হওয়ার চেষ্টা করুন।
>> সম্ভব হলে বিড করার সময় বায়ারের কাজের আংশিক কাজ করে এটাচ করে দেওয়া। উদাহরণস্বরুপঃ একটি ডাটা এন্ট্রি কাজে বায়ার বলল কোন ডিরেক্টরী থেকে ৫০০০ কোম্পানীর নাম, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি সংগ্রহ করে Excelএ ইনপুট দিতে হবে। এক্ষেত্রে, বায়ার যদি কোন ডিরেক্টরীর নাম উল্লেখ করে দেয় তবে অন্ততঃপক্ষে ২০টি কোম্পানীর তথ্যাদি এ ইনপুট দিয়ে বিডের সময় এটাচ করে দিন। এ প্রক্রিয়ায় কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে অনেক।
সবাই ভাল ও সুস্থ্য থাকবেন, এ প্রত্যাশায় রাখছি। আর্টিক্যালটি ভাল লাগলে কমেন্টস করবেন।
>> ভাল রেটিং এর জন্য প্রথমদিকে কমমূল্যে বিড করুন।
>> প্রজেক্ট সাবমিট হওয়ার সাথে সাথে বিড করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ, প্রথম সারির আবেদনকারী হওয়ার চেষ্টা করুন।
>> সম্ভব হলে বিড করার সময় বায়ারের কাজের আংশিক কাজ করে এটাচ করে দেওয়া। উদাহরণস্বরুপঃ একটি ডাটা এন্ট্রি কাজে বায়ার বলল কোন ডিরেক্টরী থেকে ৫০০০ কোম্পানীর নাম, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি সংগ্রহ করে Excelএ ইনপুট দিতে হবে। এক্ষেত্রে, বায়ার যদি কোন ডিরেক্টরীর নাম উল্লেখ করে দেয় তবে অন্ততঃপক্ষে ২০টি কোম্পানীর তথ্যাদি এ ইনপুট দিয়ে বিডের সময় এটাচ করে দিন। এ প্রক্রিয়ায় কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে অনেক।
সবাই ভাল ও সুস্থ্য থাকবেন, এ প্রত্যাশায় রাখছি। আর্টিক্যালটি ভাল লাগলে কমেন্টস করবেন।
পরবর্তী পর্বে আলোচনা করব-ব্লগিং/এডসেন্সে সফলতা না পাওয়ার কারনসমূহ
Facebook এ আমি Click here
MulTifarioUs GLobe